Header Ads

Header ADS

সুবহান আল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ আল্লাহু আকবার বিশেষ আমল


সুবহান আল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ আল্লাহু আকবার এর ফজিলত

1. হজরত সামুরা ইবনে জুন্দুব (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, চারটি কালেমা আল্লাহ তায়ালার কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয়- সুবহান আল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ আল্লাহু আকবার। এর যেকোনো কালেমা ইচ্ছা হয় প্রথমে পড়ো আর যে কালেমা ইচ্ছা হয় পরে পড়তে পারো, কোনো অসুবিধা নেই। (মুসলিম)
এক রেওয়ায়েতে আছে, এই চারটি কালেমাই কোরআন মজিদের পর সর্বাপেক্ষা উত্তম এবং এগুলো কোরআন মজিদেরই কালেমা। (মুসনাদে আহমাদ)
2.  হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার কাছে 'সুবহান আল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আল্লাহু আকবার' বলা এমন প্রতিটি জিনিস থেকে খুব বেশি প্রিয়, যার ওপর সূর্য উদয় হয়। (কারণ এগুলোর আজর (পুরস্কার) ও সাওয়াব বাকি থাকবে, আর দুনিয়া নিজের সব আসবাবসহ শেষ হয়ে যাবে)- মুসলিম।
3. হজরত আবু সালমা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এই ইরশাদ করতে শুনেছি, বাহ্, বাহ্! পাঁচটি জিনিস আমলনামার পাল্লায় কত বেশি ভারী, ১. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ২. সুবহান আল্লাহ, ৩. আলহামদুলিল্লাহ, ৪. আল্লাহু আকবার ৫. কোনো মুসলমানের নেক ছেলের ইন্তেকাল হয়ে যায় আর সে সাওয়াবের আশায় সবর করে। (মুসতাদরাকে হাকেম)
4. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছি, যে ব্যক্তি 'সুবহান আল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আল্লাহু আকবার' পড়বে তার আমলনামায় প্রতিটি হরফের বিনিময়ে ১০টি নেকি লিখে দেওয়া হবে। (তাবারানি, মাজমায়ে যাওয়ায়েদ)
5. হজরত উম্মে হানী (রা.) বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে এলেন। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি, দুর্বল হয়ে পড়েছি, এমন কোনো আমল বলে দিন, যেন বসে বসে করতে থাকি। তিনি ইরশাদ করলেন, 'সুবহান আল্লাহ' ১০০ বার করে পড়তে থাকো। এর সাওয়াব এমন, যেন তুমি ইসমাঈল আলাইহিস সালামের বংশধর থেকে ১০০ গোলাম আজাদ করলে। 'আলহামদুলিল্লাহ' ১০০ বার পড়তে থাকো। এর সাওয়াব জিন ও লাগামসহ ১০০ ঘোড়া আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় আরোহণের জন্য দেওয়ার সমতুল্য। 'আল্লাহু আকবার' ১০০ বার করে পড়তে থাকো। এর সাওয়াব গর্দানে কোরবানির মালা পরানো এমন ১০০টি উট জবাই করার সমতুল্য, যার কোরবানি আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হয়েছে। 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্' ১০০ বার করে পড়তে থাকো। এর সাওয়াব তো আসমান-জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে ভরে দেয়। আর সেদিন তোমার আমল অপেক্ষা আর কারো কোনো আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে অধিক কবুল হওয়ার যোগ্য হবে না। অবশ্য যে লোক তোমার মতো আমল করেছে, তার আমল অধিক যোগ্য হতে পারে।
অন্য রেওয়ায়েতে আছে, হজরত উম্মে হানী (রা.) বলেন, আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি এবং আমার হাড়গুলো দুর্বল হয়ে গেছে, এমন কোনো আমল বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে দাখিল করে দেয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, বাহ্ বাহ্! তুমি বড় ভালো কথা জিজ্ঞাসা করেছ, তিনি বললেন, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ১০০ বার করে পড়তে থাকো। এটা তোমার জন্য এ রকম- ১০০টি উট থেকে উত্তম, যাদের গর্দানে কোরবানির মালা পরানো হয়েছে, ঝুল পরানো হয়েছে আর সেগুলো মক্কায় জবাই করা হয়। তিনি আরো বললেন, (সেই কালেমা) ১০০ বার করে পড়তে থাকো। এটা তোমার জন্য ওই সব জিনিস থেকে উত্তম, যাকে আকাশ ও জমিন ঢেকে রেখেছে। আর সেদিন তোমার আমল অপেক্ষা আর কারো কোনো আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশি কবুল হওয়ার যোগ্য হবে না। অবশ্য সেই লোকের আমল বেশি কবুল হওয়ার যোগ্য হতে পারে, যে এই কালেমাগুলো এই পরিমাণ অথবা এর চেয়ে বেশি পরিমাণে পড়েছে। (তাবারানি, মাজমায়ে যাওয়ায়েদ)
এক রেওয়ায়েতে আছে, 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্' পড়তে থাকো। এটা কোনো গুনাহ্কে ছাড়ে না, আর এর মতো কোনো আমল নেই। (মুসতাদরাকে হাকেম)
6. হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছ দিয়ে গেলেন, আমি তখন চারা লাগাচ্ছিলাম। বললেন, আবু হোরায়রা, কী লাগাচ্ছ? আমি আরজ করলাম, নিজের জন্য চারা লাগাচ্ছি। রাসুল (সা.) ইরশাদ করলেন, আমি কি তোমাকে এ থেকে উত্তম চারার কথা বলে দেব না? 'সুবহান আল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আল্লাহু আকবার' বলো। এর প্রতিটি কালেমার বিনিময়ে তোমার জন্য জান্নাতে একটি গাছ লাগিয়ে দেওয়া হবে। (ইবনে মাজাহ্)
7. হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে এলেন এবং ইরশাদ করলেন, দেখো, নিজের বাঁচার জন্য ঢাল নিয়ে নাও। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোনো দুশমন কি এসে গেছে? তিনি ইরশাদ করলেন, জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য ঢাল নিয়ে নাও- 'সুবহান আল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আল্লাহু আকবার' পড়ো। কেননা এ কালেমাগুলো কিয়ামতের দিন তার পাঠকারীর সামনে, পেছনে, ডান ও বাঁ দিক থেকে আসবে এবং তাদের জন্য নাজাতদানকারী হবে এবং এগুলোই সেই নেক আমল, যার সাওয়াব চিরকাল মিলতে থাকবে। (মাজমায়ে বাহরাইন)
ফায়দা : 'এই কালেমাগুলো পাঠকারীর সামনের দিক থেকে আসবে'- হাদিস শরিফে বর্ণিত এ কথার উদ্দেশ্য হলো, কিয়ামতের দিন এ কালেমাগুলো এগিয়ে এসে তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে। আর ডান, বাঁ ও পেছনের দিক থেকে আসার অর্থ হলো, তার পাঠকারীকে আজাব থেকে রক্ষা করবে।


8. হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'সুবহান আল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আল্লাহু আকবার' বলার দ্বারা গুনাহ্ এমনভাবে ঝরে যায়, যেমন (শীতের মৌসুমে) গাছ থেকে পাতা ঝরে যায়। (মুসনাদে আহমাদ)

No comments

Powered by Blogger.